দেনমোহর ও মাহরে ফাতেমী
দেনমোহর ও মাহরে ফাতেমী
শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু
বিয়েতে ‘মাহর’ অবশ্য দেয় হিসেবে ধার্য করার এবং তা যথারীতি আদায় করার জন্য ইসলামে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
আল্লাহ বলেনঃ {فَمَااسْتَمْتَعْتُمْبِهِمِنْهُنَّفَآتُوهُنَّأُجُورَهُنَّفَرِيضَةً}
‘‘তোমরা তোমাদের স্ত্রীদের কাছ থেকে যে যৌন স্বাদ গ্রহণ কর, তার বিনিময়ে তাদের মাহর ফরয হিসেবেই আদায় কর’’– (সূরা আন্-নিসা ৪ঃ ২৪)।
নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ বিয়ের সময় অবশ্য পূরণীয় শর্ত হচ্ছে তা, যার বিনিময়ে তোমরা স্ত্রীর যৌন অঙ্গ নিজের জন্য হালাল করে নাও। আর তা হচ্ছে মাহর- (মুসনাদে আহমাদ)। উল্লেখ্য ইসলামী শারী‘আত অনুযায়ী মাহর আদায় করা আবশ্যকীয়। কিন্তু বিয়ের দিনেই আদায় করতে হবে এমনটি অপরিহার্য নয়। বিয়ের দিনে স্ত্রীর নিকট যাবার পূর্বে কিছু আদায় করতে হবে মর্মে ইমাম আবূ দাঊদ একটি হাদীস বর্ণনা করেছেন কিন্তু হাদীসটি দুর্বল, এতে তিনি বিয়ের পর আলী (রাযি.)-কে স্ত্রী ফাতিমা (রাযি.)-এর কাছে মাহরের কিছু না দিয়ে যেতে নিষেধ করেছেন। … [হাদীসটি দুর্বল, দেখুন ‘‘য‘ঈফ আবী দাঊদ’’ (২১২৬)]।
মাহরের পরিমাণ কী হওয়া উচিত
ইসলামী শারীআতে এ সম্পর্কে বিশেষভাবে কোন নির্দেশ দেয়া হয়নি, কোন সুস্পষ্ট পরিমাণ ঠিক করে দেয়া হয়নি। তবে এ কথা স্পষ্ট যে, প্রত্যেক স্বামীরই কর্তব্য হচ্ছে তার আর্থিক সামর্থ্য ও স্ত্রীর মর্যাদার প্রতি লক্ষ্য রেখে উভয় পক্ষের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ কোন পরিমাণ নির্দিষ্ট করে বেঁধে দেয়া। আর মেয়ে পক্ষেরও তাতে সহজেই রাযী হয়ে যাওয়া উচিত। আল্লাহর রসূলের যুগের অতি দরিদ্রতার কারণে মাহর হিসেবে এমনকি একটি লোহার আংটি দিতে, কিংবা পুরুষটির যা কিছু কুরআনের জানা আছে তা স্ত্রীকে শিখিয়ে দেয়ার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। অপরদিকে কুরআন মাজীদে বলা হয়েছে- {وَآتَيْتُمْإِحْدَاهُنَّقِنْطَاراً}
‘‘এবং তোমরা মেয়েদের এক একজনকে ‘বিপুল পরিমাণ’ ধন-সম্পদ মাহর বাবদ দিয়েছ’’- (সূরা আন্-নিসা ৪ঃ ২০)। এ আয়াতের ভিত্তিতে বিপুল পরিমাণ সম্পদ মাহর বাবদ দেয়া জায়িয প্রমাণিত হচ্ছে।
আমাদের ভারতবর্ষে ‘মাহরে ফাতেমী’
আমাদের ভারতবর্ষে ‘মাহরে ফাতেমী’ নামে একটি কথা শুনা যায়। এরূপ কথা মূল্যহীন কারণ রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আলী এর সামর্থ্যের দিকে দৃষ্টি রেখেই তাঁর মেয়ে ফাতিমার জন্য মাহর নির্দিষ্ট করেছিলেন। আর ‘মাহরে ফাতেমী’ বলে ইসলামী শারী‘আতের মধ্যে কোন বিধান নেই। অতএব ‘মাহরে ফাতেমী’ অনুসরণ করার কোনই যৌক্তিকতা নেই।
দুঃখজনক হলেও সত্য বর্তমান সময়ে আমাদের সমাজে একটি কুসংস্কার চালু হয়েছে, তা হচ্ছে এই যে, মেয়ের পরিবারের পক্ষ থেকে চেষ্টা করা হয় মাহরের পরিমাণ যেভাবেই হোক না কেন বেশী করতে হবে। উদাহরণ স্বরূপ বলতে পারি যেখানে ছেলের পাঁচ হাজার প্রদান করার সামর্থ্য রয়েছে সেখানে দু’লক্ষ/ তিন লক্ষ যেভাবেই হোক লিখে নিতে হবে। এ ভাবনায় যে, স্বামী যদি কোন সময় মেয়েকে ত্বলাক দিতে চায়, উভয়ের মাঝে মনোমালিন্য সৃষ্টি হয় তাহলে অতি সহজেই স্বামীকে যেন কাবূ করা যায়। অনেক সময় মেয়ের পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয় মাহর তো আদায় করতে হয় না অতএব বেশী লিখতে অসুবিধা কী। এ থেকে বুঝা যাচ্ছে যে, আমাদের সমাজের এক শ্রেণীর লোক মাহর আদায় করে না এবং এটিকে তুচ্ছ ব্যাপার মনে করে প্রকারান্তরে বিয়ের ক্ষেত্রে ইসলামী শারী‘আতের একটি অন্যতম বিধানকে অগ্রাহ্য করে এবং নিজেদের স্বার্থ উদ্ধার করার চেষ্টা চালায়। এটাকে আল্লাহ্ ও তাঁর রসূলের নির্দেশের বিরুদ্ধে এক প্রকারের ধৃষ্টতা বললে অত্যুক্তি করা হবে না।
গ্রন্থঃ সহীহ বুখারী (তাওহীদ) হাদিস নং ৫০৭২ -এর টিকা
অধ্যায়ঃ ৬৭/ বিয়ে (كتاب النكاح)
‘আপনিও হোন ইসলামের প্রচারক’
প্রবন্ধের লেখা অপরিবর্তন রেখে এবং উৎস উল্লেখ্য করে আপনি Facebook, Twitter, ব্লগ, আপনার বন্ধুদের Email Address সহ অন্য Social Networking ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন, মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন। “কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবেনা” [সহীহ্ মুসলিম: ২৬৭৪]
আন-নূর ইসলামিক ম্যারেজ মিডিয়া – একসাথে জান্নাতে, ইন-শা-আল্লাহ
সহীহ আকীদাহ সম্পন্ন দ্বীনদার পাত্র-পাত্রী সন্ধান কেন্দ্র
বায়োডাটা পাঠাতে ফরম | আমাদের কাজের প্রসিডিউর | শর্তসমূহ | আমাদের ঠিকানা
One thought on “দেনমোহর ও মাহরে ফাতেমী”
alhamdulillah