প্রবন্ধটি পড়ে শেয়ার করতে ভুলবেন না
জান্নাতি নারীর বৈশিষ্ট্য
আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,
﴿وَمِنۡ ءَايَٰتِهِۦٓ أَنۡ خَلَقَ لَكُم مِّنۡ أَنفُسِكُمۡ أَزۡوَٰجٗا لِّتَسۡكُنُوٓاْ إِلَيۡهَا وَجَعَلَ بَيۡنَكُم مَّوَدَّةٗ وَرَحۡمَةًۚ إِنَّ فِي ذَٰلِكَ لَأٓيَٰتٖ لِّقَوۡمٖ يَتَفَكَّرُونَ ٢١ ﴾ [الروم: ٢١]
“আর তাঁর নিদর্শনাবলীর মধ্যে রয়েছে যে, তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের থেকেই স্ত্রীদের সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা তাদের কাছে প্রশান্তি পাও। আর তিনি তোমাদের মধ্যে ভালোবাসা ও দয়া সৃষ্টি করেছেন। নিশ্চয় এর মধ্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে সে কওমের জন্য, যারা চিন্তা করে”। [সূরা : আর্-রূম: ২১]
নেককার নারীর প্রধান দায়িত্ব স্বামীর প্রশান্তি ও চক্ষু শীতলকারী হয়ে ওঠা, তার সম্পদ ও সন্তানদের হিফাজাত ও রক্ষনাবেক্ষন করা, নিজের সতীত্বের হিফাজত করা, বৈধ প্রতিটি বিষয়ে স্বামীর আনুগত্য করা, স্বগৃহে অবস্থান করা।
ইবনে কাসির রহ. লিখেন,فالصالحات শব্দের অর্থ নেককার নারী, ইবনে আব্বাস ও অন্যান্য মুফাসসিরের মতে قانتات শব্দের অর্থ স্বামীদের আনুগত্যশীল নারী, আল্লামা সুদ্দি ও অন্যান্য মুফাসসির বলেন حافظات للغيب শব্দের অর্থ স্বামীর অনুপস্থিতিতে নিজের চরিত্র ও স্বামীর সম্পদ রক্ষাকারী নারী।’’[1]
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘যে নারী পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে, রমজানের রোজা রাখে, আপন লজ্জাস্থান হেফাযত করে এবং স্বামীর আনুগত্য করে তাকে বলা হবে, যে দরজা দিয়ে ইচ্ছে তুমি জান্নাতে প্রবেশ কর।’’[2]
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘তোমাদের সেসব স্ত্রী জান্নাতি, যারা মমতাময়ী, অধিক সন্তান প্রসবকারী, পতি-সঙ্গ প্রিয়- যে স্বামী গোস্বা করলে সে তার হাতে হাত রেখে বলে, আপনি সন্তুষ্ট না হওয়া পর্যন্ত আমি দুনিয়ার কোনো স্বাদ গ্রহণ করব না।’’[3]
সুনানে নাসাঈতে আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে একদা জিজ্ঞাসা করা হল, হে আল্লাহর রাসূল, কোনো নারী সব চেয়ে ভালো? তিনি বললেন, ‘‘যে নারী স্বামীকে আনন্দিত করে, যখন স্বামী তার দিকে দৃষ্টি দেয়। যে নারী স্বামীর আনুগত্য করে, যখন স্বামী তাকে নির্দেশ দেয়, যে নারী স্বামীর সম্পদ ও নিজ নফসের ব্যাপারে, এমন কোনো কর্মে লিপ্ত হয় না, যা স্বামীর অপছন্দ।’’[4]
হে মুসলিম নারী, নিজকে একবার পরখ কর, ভেবে দেখ এর সাথে তোমার মিল আছে কতটুকু। আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার পথ অনুসরণ কর। দুনিয়া-আখেরাতের কল্যাণ অর্জনের শপথ গ্রহণ কর। নিজ স্বামী ও সন্তানের ব্যাপারে যত্নশীল হও।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জনৈক মহিলাকে জিজ্ঞাসা করেন, ‘‘তোমার কি স্বামী আছে? সে বলল হ্যাঁ, রাসূল বললেন, তুমি তার কাছে কেমন? সে বলল, আমি তার সন্তুষ্টি অর্জনে কোনো ত্রুটি করি না, তবে আমার সাধ্যের বাইরে হলে ভিন্ন কথা। রাসূল বললেন, লক্ষ্য রেখ, সে-ই তোমার জান্নাত বা জাহান্নাম।’’[5]
উপরের আলোচনার আলোকে নেককার নারীর গুণাবলি :
১. নেককার : ভালো কাজ সম্পাদনকারী ও নিজ রবের হক আদায়কারী নারী।
২. আনুগত্যশীল : বৈধ সকল কাজে স্বামীর আনুগত্যশীল নারী।
৩. সতী : নিজ নফসের হেফাযতকারী নারী, বিশেষ করে স্বামীর অবর্তমানে।
৪. হেফাযতকারী : স্বামীর সম্পদ ও নিজ সন্তান হেফাযতকারী নারী।
৫. আগ্রহী : স্বামীর পছন্দের পোশাক ও সাজ গ্রহণে আগ্রহী নারী।
৬. সচেষ্ট : স্বামীর গোস্বা নিবারণে সচেষ্ট নারী। কারণ হাদিসে এসেছে, স্বামী নারীর জান্নাত বা জাহান্নাম।
৭. সচেতন : স্বামীর চাহিদার প্রতি সচেতন নারী। স্বামীর বাসনা পূর্ণকারী।
যে নারীর মধ্যে এসব গুণ বিদ্যমান, সে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ভাষ্য মতে জান্নাতী। তিনি বলেছেন, ‘‘যে নারী পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে, রমজানের রোজা রাখে, নিজ চরিত্র হেফাযত করে ও স্বামীর আনুগত্য করে, তাকে বলা হবে, যে দরজা দিয়ে ইচ্ছে জান্নাতে প্রবেশ কর।’’[6]
পরিশেষে স্বামীদের উদ্দেশে বলি, আপনারা নারীদের ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করুন, তাদের কল্যাণকামী হোন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘তোমরা নারীদের কল্যাণকামী হও। কারণ, তাদের পাঁজরের হাড্ডি দ্বারা সৃষ্টি করা হয়েছে, পাঁজরের হাড্ডির ভেতর উপরেরটি সবচে’ বেশি বাঁকা। যদি সোজা করতে চাও, ভেঙে ফেলবে। আর রেখে দিলেও তার বক্রতা দূর হবে না, তোমরা নারীদের ব্যাপারে কল্যাণকামিতার উপদেশ গ্রহণ কর।’’[7]
তথ্যসুত্র:
দারে কুতনি [1] ইবনে কাসির : ১ : ৭৪৩ [2] ইবনে হিববান, সহিহ আল-জামে : ৬৬০ [3] আলবানির সহিহ হাদীস সংকলন : ২৮৭ [4] সহিহ সুনানে নাসায়ী : ৩০৩০ [5] আহমাদ : ৪ : ৩৪১ [6] ইবনে হিববান, আল-জামে : ৬৬০ [7] বর্ণনায় বুখারী, মুসলিম, বায়হাকি ও আরো অনেকে।
'আপনিও হোন ইসলামের প্রচারক'
প্রবন্ধের লেখা অপরিবর্তন রেখে এবং উৎস উল্লেখ্য করে আপনি Facebook, Twitter, ব্লগ, আপনার বন্ধুদের Email Address সহ অন্য Social Networking ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন, মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন। "কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবেনা" [সহীহ্ মুসলিম: ২৬৭৪]
আন-নূর ইসলামিক ম্যারেজ মিডিয়া – একসাথে জান্নাতে, ইন-শা-আল্লাহ
সহীহ আকীদাহ সম্পন্ন দ্বীনদার পাত্র-পাত্রী সন্ধান কেন্দ্র
বায়োডাটা পাঠাতে ফরম | আমাদের কাজের প্রসিডিউর | শর্তসমূহ | আমাদের ঠিকানা
সর্বাধিক পঠিত লেখাসমূহ: